শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

প্রবাসে যাওয়া হলো না সোহেলর লাশ হয়ে ফিরলেন শালা-দুলাভাই

রায়পুর(লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধিঃ

মধ্য প্রাচ্যের দেশ ওমানে যাওয়া হলো না সোহেলর লাশ হয়ে ফিরলেন শালা-দুলাভাই। পারিবারিক ঋন ৮ লাখেরও উপরে। দায়-দেনা কাটিয়ে ওঠার স্বপ্ন নিয়ে জমি বন্ধক রেখে নিয়েছিলেন মধ্য প্রাচ্যের দেশ ওমানের ভিসা। পহেলা এপ্রিল স্বপ্ন জয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার কথা থাকলেও চাঁদপুর-রায়পুর আঞ্চলিক মহাসড়কের হাজিগঞ্জ গাছতলা ব্রিজ এলাকায় সিএনজি-বাস দুর্ঘটনায় দুজন নিহত হয়। নিহত দুজন হলেন, সোহেল হোসেন (২৫), রুবেল হোসেন (২৬)। দুজনের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার ৮নং দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নে চরকাচিয়া গ্রামে। এরমধ্যে নিহত সোহেল ওমান যাওয়ার কথা ছিল।

 

 

সরজমিনে ৩১ মার্চ রাত ৯টা নাগাদ গিয়ে জানা যায়, শুক্রবার দুপুর ১২ টায় চরকাচিয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে বের হন দুজন (শালা-দুলাভাই) এরপর রায়পুর থেকে সিএনজি যোগে চাঁদপুরের লঞ্চ ঘাটের উদ্দেশ্য যাত্রাকালে আনন্দ পরিবহনের সাথে দুর্ঘটনায় প্রান যায় তাদের। রুবেল হোসেন নামে নিহত ব্যাক্তি নিহত সোহেলের বোন জামাই। বছর দেড়েক আগে বিয়ে হওয়া রুবেলের রয়েছে ছয় মাস বয়সী মিনহা নামের একটি কন্যা সন্তান। অবুঝ মিনহাকে কারোর জানানোর সাধ্য নেই ইতোমধ্যেই মারা গেছেন তার বাবা-মামা।

 

জীর্ণশীর্ণ ঘরে বসবাস করা মিনহার মামার পরিবারটির মোট ঋণের পরিমান প্রায় ৮-৯লাখ টাকা। গ্রাম্য মহাজন ও এনজিও থেকে এসব টাকার অধিকাংশ ঋণ নিয়েছে তারা। ছেলে মারা যাওয়ায় এই ঋণের টাকার বিষয়টি হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের দুঃখের অন্যতম কারণ।৷ স্বজন হারানোর দুঃখ আর ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় নিহত সোহেলের পরিবারে চলছে শোকের মাতম।

 

বিলাপ কন্ঠে দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার  প্রতিনিধিকে সোহেলের মা নুরজাহান বেগম বলেন, আঁর মাতিন-রতন নাই। দেনা-হেনা,কষ্ট-দুঃখ করি বিদাশের লাই লাইন দিছি। কে জাইনতো আঁর বাবা শ্যাষ অই যাইবো। আঁর ঝিঁ জামাইগাও নাই। ঝিঁয়ের ঘরো ওগ্গা নাতিন আছে। আমরা অন নিঃস্ব অই গেছি।

 

অন্যদিকে নিহত সোহেলের বোনজামাই রুবেলের বাড়িতেও বিরাজ করছে একই অবস্থা। পরিবার সুত্রে জানা যায়, বেলা তিনটা নাগাদ তারা মৃত্যু সংবাদ পায়। দুর্ঘটনার আনুমানিক সময় ২.৩০-৩ টা – পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

 

নিহত রুবেলের বাবা আবু কালাম সর্দার বলেন, আঁর মাইজ্জা হোলাগারে চাপা দি মাইচ্ছে আনন্দ পরিবহন। আঁই এর বিচার চাই।

 

তাদের প্রতিবেশী দেলোয়ার খান নামের ব্যাক্তি প্রতিবেদকে বলেন, এরা খুবই দরিদ্র। সংসার চালাতে কষ্ট হয়। পরিবারে একমাত্র আয়ের উৎস ছিল নিহত সোহেল। তার বোনের জামাই রুবেলও একই দুর্ঘটনায় নিহত হয়, তার একটি কন্যা সন্তান আছে। পরিবার দুটির আর্থিক অবস্থান বিবেচনায় নিয়ে সরকারি-বেসরকারি সাহায্য-সহযোগিতা কামনা করছি।

দেশ জার্নাল/এসএম 

দেশ জার্নাল বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----