কিস্তির টাকার জন্য প্রাণ গেল এনজিও কর্মীর হত্যার পর মাটিচাপা


নুরুল আমিন ভূইয়া দুলাল নিজস্ব প্রতিবেদক
লক্ষ্মীপুরে কিস্তির টাকা চাওয়ায় এনজিও কর্মীকে হত্যার পর মাটিচাপা দেয়া হয়।
লক্ষ্মীপুরে কিস্তির টাকা চাইতে গেলে এনজিও কর্মীকে লাঠি দিয়ে মারাত্মকভাবে মাথায় আঘাত করে মো. ইউনুছ (৫০) নামে এক এনজিও কর্মীকে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয, হত্যার পর তার মরদেহ মাটিতে পুঁতে রাখা হয়। এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডে জড়িত জাবেদ হোসেনকে আটক করেছে লক্ষ্মীপুর থানা পুলিশ।
জাবেদের তথ্য অনুযায়ী ৬ দিন পর বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) সকালে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের দক্ষিণ মজুপুরের কালু হাজি সড়ক এলাকা থেকে মাটিচাপা অবস্থায় পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে বলে জানা যায়।
এসময় ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. হাসান মোস্তফা স্বপন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সোহেল রানা ও সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
তথ্যসূত্রে জানা যায় নিহত ইউনুস লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড আবদুল গনি হেডমাস্টার সড়কের আবদুর রশিদ মোল্লার ছেলে। তিনি গ্রামীণ মাল্টিপারপাসের মাঠকর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন ।
এদিকে খুনি আটকৃত জাবেদ কালু হাজি সড়কের সফিকুর রহমানের ছেলে সে চায়ের দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন । এর বাহিরেও তিনি পেশায় একজন নির্মাণ শ্রমিক হিসেবেও কাজ করেন বলে জানা যায়।
হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্র জানায়, জাবেদ সম্প্রতি ইউনুছের এনজিও থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নেন। এতে প্রতিদিন তাকে ২৫০ টাকা করে জমা দিতে হয়। কিন্তু তিনি নিয়মিত হারে কিস্তির টাকা পরিশোধ করছেন না। পারিবারিক সূত্র থেকে জানা যায় গত ২৪ আগস্ট বিকেলে মোটরসাইকেলে করে ইউনুস বাসা থেকে বের হয়ে। আর তিনি বাসায় ফেরেননি। এদিকে
স্বামীর খোঁজে গত ২৫ আগস্ট স্ত্রী সুলতানা জামান সদর লক্ষ্মীপুর মডেল থানায় একটি জিডি করেন। এরই জেরে পুলিশ তদন্তের পর অভিযান চালিয়ে বুধবার (৩০ আগস্ট) রাত সাড়ে এগারোটার দিকে জাবেদকে তার এলাকা থেকে আটক করে। অনেক জিজ্ঞাসাবাদের পর সে পুলিশের কাছে হত্যার ঘটনার স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
এদিকে জাবেদ পুলিশকে আরো জানান যে, গত ২৪ আগস্ট রাতে ইউনুস দোকানে তার কাছে কিস্তির টাকা চাইতে আসে। কিন্তু তিনি টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায়,। এতে দুজনের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও বিষম ঝগড়া শৃষ্টি হয়।
ওই সময় জাবেদ সজোরে লাঠি দিয়ে ইউনুসের মাথায় আঘাত করিলে এতেই ইউনুস সঙ্গে সঙ্গেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
এবং ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। ইউনূসের মৃত্যুর পর জাবেদ নিজের দোকানের পেছনে তার লাস নিয়ে মাটিতে পুঁতে রাখে। এর পরে ইউনুসের ব্যবহৃত মোবাইল ও মোটরসাইকেলটি পাশের পুকুরে ফেলে দেন বলে স্বীকারোক্তি করেন ।
এ হত্যার বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. হাসান মোস্তফা স্বপন বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত জাবেদকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। মাটিতে পুঁতে রাখা মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। পার্শ্ববর্তী পুকুর থেকে ইউনুসের মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়েছে।
দেশ জার্নাল বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।