তুলে নিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগ আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে


নুরুল আমিন ভূঁইয়া দুলাল, নিজস্ব প্রতিবেদক
চাঁদা দাবি ভূমি দখল সহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগে আ.লীগ নেতা মনির মোল্লার বিরুদ্ধে মামলা
লক্ষ্মীপুরে অটোরিকশা চালকের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা মনির হোসেন মোল্লাসহ ২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগি রতন কবিরাজ ।
এদিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযোগটি রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এফআইআর হিসেবে রুজু করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত ।
গত বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে অটোরিকশা চালক রতন কবিরাজের অভিযোগের ভিত্তিতে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (রায়পুর) আদালতের বিচারক বেলায়েত হোসেন এ নির্দেশ দেন।
আদালতের এই নির্দেশনা জানতে পেরে মনির মোল্লা অটো রিক্সা চালক রতন কবিরাজকে অনবরত হুমকি-ধমকি দিয়ে আসতেছে।
রতন কবিরাজ প্রাণভয়ে লোক চক্ষুর অন্তরালে আত্মগোপন করে আছেন বলে জানা যায়।
এদিকে বাদীর আইনজীবী এ টি এম জাকির হোসেন মঞ্জু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আদালত রতনের অভিযোগটি আমলে নিয়ে এফআইআর করতে রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। একাধিক সূত্র থেকে জানা যায় ভূমি জবরদখরকারি ও চাঁদা দাবি কারী মনির মোল্লা নিজেকে বাঁচাতে বিভিন্নভাবে তদবির করে আসছেন বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছ।
এদিকে বাদী রতন রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়া গ্রামের মৃত সামছুল হক কবিরাজের ছেলে। এবং
অভিযুক্ত মনির দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী জানায় মনির মোল্লা নিরীহ মানুষের ভূমি দখল ও চাঁদাবাজি তার পেশা। অপর অভিযুক্ত মহিন উদ্দিন গাজী তার বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
অনুসন্ধান ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভূমিহীন হওয়ায় আবেদনের ভিত্তিতে ২০১৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রতন ও তার স্ত্রী রিনা বেগমকে সরকার চরকাছিয়া মৌজায় ৬০ শতাংশ জমি বন্দোবস্ত দেয়। কিন্তু ওই জমি তারা এখনো দখলে নিতে পারেনি ভূমি খোর ও চাঁদা দাবী কারি নেতা নাম ধারী মনির মোল্লার কারণে। বাদীর জবানবন্দী ও বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় জমিটি আওয়ামী লীগ নেতা মনির জোরপূর্বক দখলে করে রেখেছে।
রতন তার জমি বুঝে পেতে একাধিকবার মনির মোল্লার কাছে যান। কিন্তু উল্টো মনির তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন বলে অভিযুক্ত রতন জানান। আর জমি ভোগদখলে বুঝে পেতে হলে ২ লাখ টাকা দিতে বলেন তাকে। এর জের ধরেই গত ১৯ জুলাই দুপুরে রতনের ছেলে শরিফ হোসেন কবিরাজ রিকশায় যাত্রী নিয়ে স্থানীয় মোল্লারহাট বাজারে গেলে আওয়ামী লীগ নেতা মনির ও তার সহযোগী মহিন অটোরিকশাটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
অভিযুক্ত মনের মোল্লা পরে রিকশাটি ভাঙচুর ও ব্যাটারি নিয়ে গিয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা ক্ষতি করেন বলে রতন মিডিয়ার কর্মীদের জানান । এ সময় রতনের ছেলেকেও মারধর করা হয়। ঘটনাটি জানতে পেরে রতন ঘটনাস্থলে আসলে তাকে আটক করে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন মনির মোল্লা।
একপর্যায়ে নিরুপায় হয়ে ৪০ হাজার টাকা মুক্তি পণ দিয়ে রতন তাদের হাত থেকে ছাড়া পান। ই তো পূর্বে এ নিয়ে রতন জেলা পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এতে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে রতনকে হত্যার হুমকি দেন।
বাদী রতন কবিরাজ বলেন, অভিযুক্তরা আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। তারা প্রভাবশালী আমি এখন পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি।
আওয়ামী লীগ নেতা মনির হোসেন মোল্লার বক্তব্য নেওয়ার জন্য তার মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, আদালতের আদেশের কপি এখনও হাতে এসে পৌঁছেনি। আদেশ পেলে নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দেশ জার্নাল বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।