শনিবার, ৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

“বাদামওয়ালার ঘরে শিক্ষার আলোর জ্যোতি

 

নুরুল আমিন ভূইয়া দুলাল নিজস্ব প্রতিবেদক
“যদি লক্ষ্য থাকে অটুট, বিশ্বাস হৃদয়ে,
হবেই হবে দেখা, দেখা হবে বিজয়ের।” এ যেন কবির কথার বাস্তব প্রতিফলন।
অর্থের অভাব কিংবা দারিদ্র্যের চোখ রাঙ্গানি কোন কিছুই দমাতে পারেনি সামান্য বাদামওয়ালা শাহ আলমকে। নিজের আদরের ৫ সন্তানকেই করেছেন শিক্ষার আলোয় আলেকিত।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ১৪ নং মান্দারী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের মনোরুদ্দীন হাওলাদার বাড়ির শাহ আলম ও নূর নাহার দম্পতির ৪ ছেলে ১ মেয়ে।
বড়ছেলে হাফেজ মাওলানা জসিমউদদীন, মেঝোছেলে পারভেজ আলম পড়ছেন লক্ষ্মীপুর সরকারী কলেজে পদার্থ বিজ্ঞানে অনার্স তৃতীয় বর্ষে, সেজো ছেলে হাফেজ মিরাজ হোসেন পড়ছেন দাওরায়ে হাদীস, আর ছোট ছেলে হাফেজ ওমর ফারুক হাফেজী শেষ করে পড়ছেন পরব্রতী ক্লাশে।
একমাত্র মেয়ে মোসাঃ আয়েশা আক্তার পড়ছে মান্দারী আলীম মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণিতে।

হাফেজ জসিমউদদীন জানান, আমার বাবা নিজে পড়ালেখা না করলেও শিক্ষার প্রতি তার আগ্রহ ব্যাপক, তাই নিজে সামান্য ব্যবসা করলেও সন্তানদের পড়ালেখার প্রতি তিনি ছিলেন আগ্রহী। তিনি তার পিতা মাতার জন্য সকলের দোয়া কামনা করেন।
মেঝোছেলে পারভেজ জানান, অদম্য ইচ্ছে আর কঠোর অধ্যবসায় থাকলে স্বপ্ন পূরণ হবেই। তাদের পরিবারের দারিদ্র্যতা বা অর্থের অভাব কোন কিছুই বাধা হতে পারেনি। শিক্ষার প্রতি তার বাবা মায়ের প্রবল আগ্রহই তাদেরকে আলোকিত করছে। তিনি তার বাবার হালাল ব্যবসার জন্য গর্বিত।
সেঝোছেলে হাফেজ মিরাজ জানান, আমাদের বাবা-মা নিজেরা পড়ালেখা করতে না পারলেও শিক্ষার আলো থেকে আমাদেরকে বঞ্চিত করেনেনি। শিক্ষা জীবনের বাকী পথটুকু শেষ করে সমাজে পিতামাতার মুখ উজ্জ্বল করতে তিনিও সকলের দোয়া কামনা করেন।
লক্ষ্মীপুর শহরের বিভিন্ন জাগায় বাদাম বিক্রি করে ৮ সদস্যর পরিবার নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন শাহ আলম। তিনি বলেন মানুষকে বড় হতে হলে শিক্ষার বিকল্প নাই। তাই নিজে কষ্ট করলেও সন্তানরা যেনো উন্নত জীবণ পায় তাই নিজের জীবনের সব আয় ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার জন্য ব্যয় করছেন তিনি। সন্তানরা মানুষ হলেই তার জীবনের সব চাওয়া পূর্ণ হবে বলে তিনি জানান।

পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করা গৃহিণী মা নূর নাহার বলেন, আমার ছেলেমেয়েরা পড়ালেখা করে একদিন বড় হবে এটাই আমার স্বপ্ন, আমার স্বপ্ন যেন সত্যি হয় তার জন্য সকলে দোয়া করবেন।

১৪ নং মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রুবেল পাটোয়ারী জানান, শাহ আলম একজন সৎ মানুষ, ছোটোখাটো হলেও তিনি সৎ উপার্জন করছেন। সমাজের সকলের জন্য তিনি প্রেরণা। পরিবারটির জন্য কোন সহযোগিতার দরকার হলে আমি ও আমার পরিষদ পাশে আছি।

দেশ জার্নাল বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----