বেনজীরের কি হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক: যথারীতি দুর্নীতি দমন কমিশনের ডাকে সাড়া দেননি বেনজীর আহমেদ। আজ তার দুদকে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুদকে তিনি হাজিরা দেননি। বিদেশে অবস্থান করছেন সাবেক এই পুলিশ প্রধান। তবে হাজিরা না দিলেও তিনি আত্মপক্ষ সমর্থন করে দুর্নীতি দমন কমিশনে একটি চিঠি দিয়েছেন। দুদকের পক্ষ থেকে সেই চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, বেনজীর আহমেদ যে চিঠি দিয়েছেন সেই চিঠি দুদকের কমিশন বৈঠকে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হবে এবং এই চিঠির সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’ একাধিক সূত্র বলছে, বেনজীর আহমেদ তার চিঠিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন এবং তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার বলেও উল্লেখ করেছেন।বেনজীর আহমেদ বলেছেন যে, তার বিরুদ্ধে যেসমস্ত অভিযোগ গুলো হচ্ছে সেটি একতরফা, মিথ্যা বানোয়াট। তিনি মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার। তার প্রতি ঈর্ষান্বিত এবং দায়িত্ব পালন করা কালে কারও স্বার্থে আঘাত করার কারণে তারা আক্রোশবশত তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। তার স্ত্রী অসুস্থ-এ কারণে তাদের দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসার জন্য তিনি বিদেশে অবস্থান করছেন বলেও বেনজীর আহমেদ তার চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। তার যেসমস্ত সম্পদ এবং অবৈধ অর্থ উপার্জনের অভিযোগ উঠেছে সেই সমস্ত সম্পদগুলো তার বৈধ উপার্জন থেকে আহরিত হলেও তিনি চিঠিতে দাবি করেছেন।
তবে দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনে কোন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে যদি ব্যক্তিগত হাজিরার জন্য ডাকা হয় তাহলে তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা দিতে হয়। এর কোনো ব্যত্যয় ঘটানোর সুযোগ আইনে নেই। কাজেই দুর্নীতি দমন কমিশন তার চিঠি আমলে নেবে কি না সেটা একমাত্র কমিশন নির্ধারণ করতে পারবে। তবে বর্তমানে দুদকের যে আইন রয়েছে, সেখানে তার এই চিঠি আমলে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সেক্ষেত্রে বেনজীর আহমেদের কি হবে-এ রকম প্রশ্নের উত্তরে দুদকের একজন আইনজীবী বলেছেন, দুদক আইন অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রমগুলো নির্ধারিত হবে।
এখন বেনজীর আহমেদের অবৈধ সম্পদের যে অনুসন্ধান সেই অনুসন্ধান চূড়ান্ত হবে এবং তদন্ত রিপোর্ট জমা দেবে তদন্তকারী কর্মকর্তারা। এই তদন্তের পর তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনে উত্থাপিত হবে। কমিশন যদি সিদ্ধান্ত নেয় যে তদন্ত প্রতিবেদন যথার্থ হয়েছে, সে ক্ষেত্রে তিনি অভিযুক্ত হলে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করা হবে। এই মামলার ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন অধিকতর তদন্ত করবে এবং চূড়ান্তভাবে তার বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান করবে। এবং এই চার্জশিট প্রদানের পর দুর্নীতি দমন কমিশন এই মামলাটি আদালতে গড়াবে।
সেই সময় আদালত চার্জশিট অনুমোদন করলে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হবে। আর পরবর্তী মামলার কার্যক্রম হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে সুস্পষ্ট বলা হয়েছে যে, একজন অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি পলাতক থাকেন বা আদালতে হাজিরা না দেন, সে ক্ষেত্রে তার অনুপস্থিতিতেই বিচার করা সম্ভব হবে। এ ধরনের বিচার কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন হয়।
আর বেনজীর আহমেদ যেহেতু আদালতে হাজিরা দেননি সে কারণে তার বিচার কার্যক্রমও দ্রুত সম্পন্ন হতে পারে যদি না তিনি আইনের আশ্রয় গ্রহণের সুযোগ না নেন। এখন দেখার বিষয় যে, দুর্নীতি দমন কমিশনের যে কার্যক্রম সেই কার্যক্রমগুলো কত দ্রুত এগোয়। তবে আপাতত যে বেনজীর আহমেদের দেশে ফেরা কোন সম্ভাবনা নেই সেটি স্পষ্ট। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বেনজীর আহমেদ এই সময় তুরস্কে অবস্থান করতে পারেন। তবে তিনি কোন দেশে অবস্থান করছেন এই নিয়ে এখনও ধুম্রজাল রয়েছে।
দেশ জার্নাল বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।