বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

এবার সংসদে ও ‌‘খেলা হবে’ বললেন , ওবায়দুল কাদের

 

 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি প্রায় সব রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বলছেন ‘খেলা হবে, খেলা হবে আন্দোলনে, খেলা হবে নির্বাচনে’। এবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনেও তিনি বলেছেন খেলা হবে।

বুধবার (২ নভেম্বর) সংসদের অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ বিষয়টি নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেন। এ সময় বিএনপির হারুন খেলা বন্ধ করতে বললে ওবায়দুল কাদের খেলা চালু রাখার কথা বলেন।

হারুনুর রশীদ জনদুর্ভোগের কথা তুলে সরকারের সমালোচনা করেন। জনদুর্ভোগ থেকে জনঅসন্তোষ তৈরি হচ্ছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, দেশ এখন জনদুর্ভোগের দেশে পরিণত হয়েছে।

এই জনঅসন্তোষকে লাঘবে সরকারের কোনো পদক্ষেপ আছে বলে মনে হয় না। বিমানবন্দর সড়কে যানজটে কারণে গত ২৬ অক্টোবর সকালে কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে নেমে বিমানবন্দর পর্যন্ত হেঁটে যেতে হয়েছে। ফলে ফ্লাইটের নির্ধারিত সময়ের আধঘণ্টা পরে পৌঁছাই। পথে শত শত বিমানযাত্রীকে দেখেছি বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন, আর সরকারকে গালিগালাজ করছেন। এটা একদিনের সমস্যা নয়, ঢাকা-গাজীপুর সড়কে প্রতিনিয়ত জনদুর্ভোগ হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক বিমানযাত্রীদের জন্য যথাযথ ট্রাফিকিং ব্যবস্থাসহ আলাদা প্যাসেজ তৈরির করতে হবে। বিমানবন্দরে তল্লাশির নামে যাত্রীদের হয়রানি করা হয়।
ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, যোগাযোগ মন্ত্রী প্রায়ই বলছেন খেলা হবে। আগামী ১০ ডিসেম্বর খেলা হবে। আমরা এমন খেলা দেখতে চাচ্ছি না যাতে মানুষ জনদুর্ভোগে পড়েন। এ দেশে দ্রব্যমূল্য, বিদ্যুৎ এগুলো নিয়ে গত কয়েকক মাস যাবৎ সভাসমাবেশ করছি। আপনি কেন পরিবহন বন্ধ করছেন? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করলে বলেন, কী কারণে পরিবহন বন্ধ হয়েছে বলতে পারব না। তাহলে দেশ চালাচ্ছেন কেন আপনারা? একটা নয়, দুটো নয়, একের পর এক, উপর্যোপরি।

তিনি বলেন, আগামী ৫ তারিখে বরিশাল সমাবেশ হবে। লঞ্চ বন্ধ, বাস বন্ধ, ত্রি-হুইলার বন্ধ। এমনকি ট্রেনও বন্ধ। সবকিছু বন্ধ। এর ফলশ্রুতিতে যে জনঅসন্তোষ তৈরি হচ্ছে তা কল্পনা করা যায় না। যোগাযোগ মন্ত্রী আছেন, দয়া করে দুর্ভোগ কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেন। জনদুর্ভোগ আর বাড়িয়েন না। জনদুর্ভোগে যে জন অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে, তাতে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হবে। মনে করি সরকার এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে৷ সরকারকে বলব রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ফিরে আসুন। দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধী দলকে যে সভাসমাবেশ করতে দেন না, সেই জায়গায় একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনুন। আমি মনে করি খেলা বন্ধ করুন। খেলা বন্ধ করে সত্যিকার অর্থে দেশকে একটি গণতান্ত্রিক পথে নিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ নেন।

পরে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিরোধী দল হলেই বিরোধিতার খাতিয়ে বিরোধিতা করা কালচারে পরিণত হয়েছে। গাজীপুরের যে প্রকল্প- পদ্মা সেতু হয়ে গেছে, মেট্রো রেল সামনে হচ্ছে। এলিভেটেড এগিয়ে গেছে। কর্ণফুলী টনেল রেডি। কী চান আর? একটা সরকার এতগুলি প্রজেক্ট। যেদিকে তাকান ফ্লাইওভার, আন্ডারপাস, ওভার পাস। আপনাদের সময় কী ছিল? জিরো। ওই জিরোর বিরুদ্ধে খেলা হবে। ওই জিরো যে করছেন, ভোগান্তিতে রাখছেন লাখো কোটি মানুষকে, সেটিই খেলা হবে।

মন্ত্রী বলেন, গাজীপুরে পানির লাইন খুবই খারাপ। আমি নিজেও ভোগান্তি, গলার কাঁটাও বলেছি, স্বীকার করেছি। এসব স্বীকার করার কালচার আপনাদের মধ্যে নেই। প্রকাশ্যে বলেছি প্রকল্পটার ডিজাইনে একটু ত্রুটি ছিল। সে কারণে সমস্যা হয়েছে। কিন্তু আজকে যান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক। ওই রাস্তা এখন স্বাভাবিক। ৬ তারিখে ইনকামিংটা খুলে দেব। না জেনে কথা বলবেন না। এত কাজ সরকার করছে- একটাতে ভুল-ত্রুটি হতে পারে। আমরা তো স্বীকার করেছি, অস্বীকার করিনি।

বিএনপির জনসভাকে কেন্দ্র করে পবিহন ধর্মঘট প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বাস ধর্মঘট কেন হয়েছে শিমুল বিশ্বাসকে (বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান) জিজ্ঞেস করেন। কেন মন্ত্রী বলবে? সে (শিমুল বিশ্বাস) পরিবহনের নেতা, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট। সেক্রেটারি বাসদের। প্রেসিডেন্ট আওয়ামী লীগের (শাজাহান খান)। আর মালিক সমিতির প্রেসিডেন্ট রাঙ্গা, জাতীয় পার্টির, সেক্রেটারি আওয়ামী লীগের এনায়েত। শ্রমিক ফেডারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট শিমুল বিশ্বাস। সে কোন দলের? সে একটা স্টেটমেন্ট দেয় না কেন? সে কি বিএনপি, নাকি অন্য কোন দল? আপনাদের দলের নেতা। তাকে জিজ্ঞেস করেন। হাসেন কেন? আগুনে বাস পুড়িয়েছেন তো? আগুনে বাস পোড়াতে ভালো লাগে। বাসওয়ালারা এখন আর বিশ্বাস করে না। তারা বিএনপিকে দেখলেই মনে করে আগুন নিয়ে আসছে। বিএনপিকে দেখলেই মনে করে পেট্রোল বোমা। বিএনপিকে দেখলেই মনে করে ককটেল। এখন আবার পতাকা! লাঠিসোটার সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা।

তিনি বলেন; খেলা অব্যাহত থাকবে, খেলা হবে। এর বিরুদ্ধেই খেলা হবে, খেলা হবে। আমি বলছি খেলা হবে খুনের রাজনীতির বিরুদ্ধে। খেলা হবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। খেলা হবে আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। খেলা হবে লুটপাটের বিরুদ্ধে। খারাপ কী বলেছি?

(সূত্র —বাং লা নি)
দেশ জার্নাল, সো/আ

 

দেশ জার্নাল বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----