শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ডায়াবেটিসে দেহের ভেতর যেসব সমস্যা হতে পারে, জেনে নিন করণীয়

ডায়াবেটিসের কারণে দেহের ভিতরের অনেক অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সমস্যা হতে পারে। প্রতীকী ছবি - দেশ জার্নাল

সাধারণত ডায়াবেটিসে নিউরোলজিক্যাল সমস্যাকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। একটি হচ্ছে— পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি। পায়ে-হাতে যে সমস্যাটি হয়। আরেকটা হচ্ছে— ইন্টার্নাল অর্গানের নার্ভ যখন যুক্ত হয়, সেটাকে বলা হয় অটোনোমিক নিউরোপ্যাথি। এর ফলে দেহের ভিতরের অনেক অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সমস্যা হতে পারে।

এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানিয়েছেন বারডেম জেনারেল হাসপাতাল ডায়াবেটিস ও হরমোন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফারিয়া আফসানা।

পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি

সাধারণত রোগীর কিছু নিউরোপ্যাথলজিক্যাল উপসর্গ (হাতে-পায়ে ঝি ঝি করা, জ্বালাপোড়া করা, ব্যথা করা, অলটার সেন্সেশন বা হেঁটে যাচ্ছেন পায়ের তলায় নরমাল একটা সেনসেশন হচ্ছে) দেখা দিতে পারে।

অটোনমিক নিউরোপ্যাথি

অটোনমিক নার্ভ আক্রান্ত হলে দেহের ভিতরের অনেক অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সমস্যা হতে পারে। যেমন আমাদের হৃদপিণ্ড ও রক্ত পরিবহন তন্ত্র আক্রান্ত হলে হৃদপিণ্ডের গতি বেড়ে যায়। শোয়া বা বসা থেকে উঠে দাঁড়ালে রক্তচাপ কমে যায় ও মাথা ঘোরে। অনেকসময় পরিপাক তন্ত্রেরও সমস্যা হয়। ফলে মনে হয় পেটের মধ্যে খাবার জমে আছে।

তাছাড়াও যৌন ক্ষমতাও অনেক সময় কমে যায়। প্রস্রাব ও মল ত্যাগে নানারকম সমস্যা দেখা যায়। শরীরের নীচের অংশে ঘাম কম তৈরি হয়। ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। এর ফলে পা ফেটে যায় ও পায়ে আলসার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার অনেক ক্ষেত্রে অটোনোমিক নিউরোপ্যাথি রোগী হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে গ্লুকোজ কমে গেলে বুঝতে পারে না। যার ফলে তার গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণের সময় অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হয়।

বিশেষ করে কার্ডিয়াক বা হার্টের সমস্যা নিয়ে, যেমন- পুসচারাল ড্রপ বা পুসচারাল হাইপারটেনশন নিয়ে প্রেজেন্ট করতে পারে।

ইউরোলজিক্যাল বা ইউরিনারি ব্লাডারের সমস্যা হলে- প্রস্রাবের কিছু সমস্যা হতে পারে। (রিটেনশন হয়ে যাওয়া, প্রস্রাব আটকে থাকা, কন্ট্রোলে না থাকা) এই ধরনের সমস্যা ডায়াবেটিসে নিউরোপ্যাথি নিয়ে আসতে পারে।

তাহলে এই নিউরোপ্যাথির উপসর্গগুলো কিন্তু আমাদের আসলে কো-রিলেট করতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীর যখন অর্গানের জটিলতা শুরু হয়, তখন সার্চ করতে হবে অন্যান্য অর্গানের নিউরোপ্যাথি আছে কি না? সেটাও দেখে নিতে হবে। সাধারণভাবে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি বা হাতে-পায়ের এই উপসর্গগুলো নিয়েই কিন্তু বেশি পেশেন্ট এসে থাকে নিউরোলজিক্যাল উপসর্গ নিয়ে।

সেই ক্ষেত্রে আমরা নিউরোলজিক্যাল কিছু পরীক্ষা আছে সেটার মাধ্যমে ডায়াগনোসিস করি। রোগীর নিউরোপ্যাথি আছে কি না। আর ইন্টার্নাল অর্গানে বা অটোনোমিক নিউরোপ্যাথি যেগুলো, সেগুলো একটা অর্গানে যদি নিউরোপ্যাথি থাকে, তাহলে আমরা ধরে নেই অন্যান্য অর্গানেও নিউরোপ্যাথি হয়েছে। সেই হিসেবে সব অর্গানের চিকিৎসা করতে হবে।

ডায়াবেটিসে আরও যেসব সমস্যা হতে পারে?

ডায়াবেটিসজনিত চোখের সমস্যা বা রেটিনোপ্যাথি, ডায়াবেটিসজনিত কিডনি বা নেফ্রোপ্যাথি, এবং ডায়াবেটিসজনিত পায়ের নার্ভ বা নিউরোপ্যাথিক সমস্যা হতে পারে। এই প্রধান সমস্যাগুলো আমরা মাইক্রোভাস্কুলার কম্প্লিকেশন হিসেবে পেয়ে থাকি।

আরেকটা জটিলতা হচ্ছে ম্যাক্রোফেস্কুলার বা বড় বড় রক্তনালীগুলো যখন ইনভলভ হয়। যেমন- স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক অথবা পায়েল রক্ত চলাচলে সমস্যা, পেরিফেরাল ভাস্কুলার ডিজিজ নিয়েও আসতে পারে। মোটামুটি ভাবে এইগুলোই বড় কম্প্লিকেশন।

অবশ্যই মনে রাখতে হবে, এই জটিলতাগুলো শুনে ভয় পাওয়ার কিছু নাই। যদি ডায়াবেটিস সুনিয়ন্ত্রিত থাকে অবশ্যই আমরা জটিলতা থেকে মুক্ত থাকতে পারি। সূত্র: ডক্টর টিভি

দেশ জার্নাল বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----