আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নিউইয়র্কে নিজ বাড়ির রান্নাঘরে বাংলাদেশি উইন রোজারিও (১৯) নামের বাংলাদেশি তরুণকে দুই পুলিশ গুলি করে হত্যা করার ৩৬ দিন পর ৩ মে পুলিশের বডি ক্যামেরার ফুটেজ প্রকাশ করেছেন নিউইয়র্ক স্টেটের অ্যাটর্নি জেনারেল (এজি) লেটিশা জেমস।' সেই ভিডিও ফুটেজ দেখার পর ডুকরে কাঁদতে কাঁদতে উইনের মা নট্যান আভা কোস্টা, বাবা ফ্রান্সিস রোজারিও এবং ছোটভাই উৎস রোজারিও বলেছেন, ‘প্রতিটি দিনক্ষণ আমরা উইনের অনুপস্থিতি গভীর বেদনার সঙ্গে অনুভব করছি।
এমন নিদারুন কষ্ট থেকে পরিত্রাণ পাচ্ছি না। এ অবস্থায় আমরা আশা করছি সেই ফুটেজ জনসমক্ষে প্রকাশের কোনো প্রয়োজন নেই। ফুটেজ স্পষ্ট করেছে যে, উইনের বেঁচে থাকা উচিত ছিল। কিন্তু পুলিশ এসে তাকে হত্যা করেছে। আমাদের এবং উইনের সুরক্ষার পরিবর্তে পুলিশ অফিসাররা উইনকে অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় গুলি করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন। তাই আমরা চাচ্ছি সেই দুই পুলিশ অফিসারকে বরখাস্ত করে যত দ্রুত সম্ভব তাদের বিচারে সোপর্দ করা হোক।’ উল্লেখ্য, উইন রোজারিও ছিল মানসিক রোগী। গত ২৭ মার্চ দুপুরে নিউইয়র্ক সিটির ওজোনপার্কে তার মা এবং ভাইয়ের সঙ্গে কিছুটা অস্বাভাবিক আচরণ করলে ৯১১-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চাওয়া হয়। নিউইয়র্ক পুলিশের দুই অফিসার বাসায় এসে উইনকে নিবৃত্ত করার চেষ্টার একপর্যায়ে টেজার (এক ধরনের অস্ত্র, যা বিদ্ধ করে উত্তেজিত/অবাধ্য লোকদের নিস্তেজ করা যায়) ছোঁড়া হয়।
সে সময়ে উইনের মা উইনকে জড়িয়ে ধরে পুলিশের প্রতি আকুতি জানাচ্ছিলেন গুলি না করার জন্য। তবুও পুলিশ সাড়া দেওয়ার পরিবর্তে উপর্যুপরি টেজার ছোড়ার আতঙ্কে মানসিক বিকারগ্রস্ত উইন চেয়ারের ওপরে রাখা মাছ/মাংস কাটার কেঁচি হাতে নিয়ে পুলিশের প্রতি ধেয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেই উভয় অফিসার কয়েক রাউন্ড গুলিতে উইনকে ধরাশায়ী করেন। ফুটেজে তা স্পষ্ট হয়েছে।
ফুটেজ দেখে সুস্থ মস্তিষ্কের অনেকেই বলছেন যে, টেজার ছোড়ার পর উইনকে গুলি করার প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু পুলিশ অফিসারদ্বয় সে চেষ্টা করেননি। উইন হত্যাকান্ডের পর থেকেই পরিবার এবং কমিউনিটির পক্ষ থেকে দাবি জানানো হচ্ছিল বডি ক্যামেরার ফুটেজ প্রকাশের জন্য। কিন্তু নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট তা আমলে না নেওয়ায় স্টেটের অ্যাটর্নি জেনারেল তা প্রকাশ করল। '
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2024 দেশ জার্নাল. All rights reserved.