নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী মঙ্গলবার (২১ মে') ঢাকায় আসচেন অস্ট্রোলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং। ধারনা করা হচ্ছে এই সফরে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলগত জোট বা কোয়াডের গুরত্বপূর্ণ সদস্য দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা ইস্যু ও দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেয়ার বার্তা দিবেন। জানা যায়, আগামী ২১-২২ মে ঢাকা সফর করবেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এটি অস্ট্রেলিয়া সরকারের তরফ থেকে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সফর হতে যাচ্ছে'। ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র জানায়, ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী। বাংলাদেশের ৭ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে অস্ট্রোলিয়া মনোভাব ছিল নেতিবাচক। তবে নির্বাচনের চার মাসের বেশি সময় পর সম্প্রতি দেশটির প্রধানমন্ত্রী এন্থনি এলবানিজ পুনরায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।' এক শুভেচ্ছা বার্তায় এন্থনি জানান, আগামী বছরগুলোতে অস্ট্রোলিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি উন্মুখ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঢাকা সফরের সময় পেনি ওং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। এছাড়াও রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাওয়ার কথাও আছে তার। পেনির সফরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ জোরদার, রোহিঙ্গা সংকট, অভিবাসন, শিক্ষা, ব্লু-ইকোনোমিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে। এছাড়া আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা ইস্যু উঠে আসবে আলোচনার টেবিলে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারত এ চার দেশের জোট কোয়াড। চার জাতির এ জোটে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ ভারত। এ অঞ্চলের অন্য কোনো দেশ এখন পর্যন্ত এতে যুক্ত হয়নি। তবে চীন বিরোধী হিসেবে পরিচিত কোয়াড বাংলাদেশকে অনেক আগ থেকেই টানতে আগ্রহী।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রতো ইন্দো-প্যাসিফিকে বাংলাদেশকে অংশীদার মনে করে।' তবে বাংলাদেশের স্পষ্ট বার্তা ইন্দো-প্যাসিফিকের কোনও সামরিক কর্মকাণ্ডে নয়, বরং অর্থনৈতিক কোনও সুবিধা থাকলে তাতে যুক্ত হতে আপত্তি নেই। ধারণা করা হচ্ছে, ঢাকা সফরের সময় অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে চাইবে। ক্যানবেরার বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা মনে করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ও রপ্তানি বেড়েছে। বিশেষ করে, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক আমদানিতে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে অস্ট্রেলিয়া। টিফা কাঠামোর আওতায় দুই দেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও উন্নয়ন করার সুযোগ রয়েছে। অস্ট্রেলিয়া থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস, উল, কটন, গম, ডালসহ কৃষিপণ্য বাংলাদেশে আমদানি করার সুযোগ রয়েছে।
প্রযুক্তিগত সেবা, শিক্ষাসংক্রান্ত দক্ষতা, কৃষি ও অবকাঠঅমো উন্নয়নে বিশেষ করে, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও হিমায়িতকরণের প্রযুক্তিতে অস্ট্রেলিয়া থেকে সহযোগিতা পেতে পারে বাংলাদেশ।' এছাড়াও দ্বৈতকর প্রত্যাহার, বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি, দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান চালু, দক্ষ অভিবাসীদের কর্মসংস্থান, ব্লু-ইকোনোমিসহ বঙ্গোপসাগর এবং আন্দামানসাগরে মানবপাচার ও মাদকপাচার ও চোরালান নিয়ে দুই দেশ সহযোগিতার পরিধি আরও বিস্তৃত করতে পারে বলে ভাষ্য এ কূটনীতিকের। এর আগে ২০১৯ সালে তৎকালীন অস্ট্রেলিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেরিস পেইন বাংলাদেশ সফর করেন। ভারত মহাসাগরীয় তীরবর্তী দেশগুলোর জোট ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে অংশ নিতে পেইন ঢাকা সফর করেছিলেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ সোহেল আলম
নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ হারুনুর রশিদ
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদক : এস এম জাকির হোসাইন
যুগ্ম সম্পাদক : তানভীর হাসান
মোবাঃ 01811-605212, 01763-592492, 01826-406770
ই-মেইল - dailydeshjournal@gmail.com
সম্পাদকীয় কার্যালয় : জনতা সুপার মার্কেট-২য় তলা, মেইন রোড, রায়পুর, লক্ষ্মীপুর।