প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় কলেজছাত্রীকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম


নুরুল আমিন ভূইয়া দুলাল নিজস্ব প্রতিবেদক
লক্ষ্মীপুরে প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় কলেজছাত্রীকে কুপিয়ে জখম করেছে
অভিযুক্ত কলেজ ছাত্র তানজীদ আহমেদ রিয়ান।
লক্ষ্মীপুরে কলেজ ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিলে রাজি না হওয়ায় কলেজে যাওয়ার পথে এক ছাত্রীকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করেছে রিহান নামের এক ছাত্র। জানা যায় সে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) দুপুর সোয়া ২ টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কলেজ রোডের সন্নিকটে সামাদ স্কুল মোড়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানা যায় ।
অনুসন্ধানে জানা যায় দালালবাজার ডিগ্রি কলেজের ছাত্র তানজীদ আহমেদ রিয়ান পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এদিকে রিয়ান প্রতারণা করে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে নিয়মিত ক্লাস করতো বলে জানা গেছে।
আরো জানা যায় অভিযুক্ত রিয়ান দালালবাজার ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ও লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কালুহাজী সড়কের প্রবাসী শামীমের ছেলে। সে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের পোশাক পরে প্রতারণার মাধ্যমে ক্লাস করতো বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে আহত কলেজছাত্রী জানায়, প্রায় ৭ মাস ধরে কলেজে আসা-যাওয়ার পথে রিহান তাকে প্রতিনিয়ত উত্যক্ত করতো। এর মধ্যে রিহান তাকে একাধিকবার প্রেমের প্রস্তাবও দেয়। কিন্তু তার প্রস্তাবে রাজি হয়নি সে। ওই ছাত্রী একপর্যায়ে সে তার পরিবারকে বিষয়টি জানায়। এনিয়ে রিহানকে সতর্ক করে দেওয়ার জন্য পরিবারের কাছেও বিচার দেয় তার মা। তখন রিহানের মা জানিয়েছেন, রিহান আর কখনো তাকে উত্ত্যক্ত করবে না। কিন্তু এরপরও রিহান তাকে উত্ত্যক্ত করতো। প্রায়ই প্রেমের প্রস্তাব গ্রহণের জন্য জোর করতো।
গণমাধ্যমকে ওই কলেজছাত্রীর মামা বলেন, ঘটনার সময় ক্লাসের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে কলেজে রওয়ানা হয় আমার ভাগ্নি । সে গাড়ি থেকে নেমে সামাদ স্কুল মোড় থেকে হেঁটেই কলেজ যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যেই পেছন থেকে রিহান ইট মারে তার মাথায়। এবং উপর্যুপরি একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মাথার সামনের অংশেও কয়েকটি আঘাত করে। তখন তার সঙ্গে আরও ১০-১২ জন হামলায় অংশ নেয় ।
এ বিষয়ে ওই কলেজছাত্রীর মা ক্রন্দনরত অবস্থায় বলেন, রিহান ও তার বন্ধুরা আমার মেয়েকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। আমি জানিনা কে বা কারা আমার আমার মেয়েকে হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে এনে ফেলে রেখে গেছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
ঘটনার সম্পর্কে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের দুইজন ছাত্রী জানায়, রিয়ান তাদের সঙ্গেই ক্লাস করতো। দালাল বাজার কলেজ থেকে ট্রান্সফার হয়ে সরকারি কলেজে ভর্তি হয়েছে বলে রিয়ান সবাইকে জানায়। রিয়ান আর ওই মেয়েটিকে একই সঙ্গে প্রায় দেখা যেত। তবে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো কি না তা আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারব না।
উক্ত ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাহবুবুল করিম বলেন, ছেলেটি আমাদের কলেজে ক্লাস করতো কিনা তা আমি সঠিকভাবে বলতে পারছি না।
আমি ক্লাসের বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া ঘটনাটি কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে ঘটেছে। পরে ঘটনাটি আমি জেনেছি, রিয়ান আমাদের ছাত্র না। আহত মেয়েটিকে দেখতে হাসপাতালে আমাদের কলেজের কয়েকজন শিক্ষককে পাঠিয়েছি।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সোহেল রানা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দেশ জার্নাল বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।