শনিবার, ৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

নির্যাতন সইতে না পেরে , গৃহবধূর আত্মহত্যা

 

নুরুল আমিন ভূইয়া দুলাল নিজস্ব প্রতিবেদক

লক্ষ্মীপুরে পালক মেয়ে জেনে অমানবিক নির্যাতন, অবশেষে গৃহবধূর আত্মহত্যা।
লক্ষ্মীপুরে স্বামী-শাশুড়ি ও ননদ সহ পরিবারের সকলের মারধরসহ নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে শারমিন আক্তার নুপুর (১৯) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা যায় । বুধবার (৩০ আগস্ট) বিকালে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের করইতলা গ্রাম থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে থানা পুলিশ।

এ ব্যাপারে নিহতের ভাই রাকিব হোসেন রায়হানের অভিযোগ, ফার্নিচারের জন্য তার উপর শারীরিক মানসিক নির্যাতন করা হতো প্রতিনিয়ত। নিহতের স্বামী মোহাম্মদ উল্যাহ লিটনসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে হত্যার পর নুপুরের মরদেহ ঝুলিয়ে রেখেছে। এরআগে পালক মেয়ে জানতে পেরে তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন শুরু হয়। আত্মহত্যার ঘটনার পর নুপুরের ৮ মাস বয়সী সন্তান আবদুল তাকরিমকে নিয়ে সবাই গা ডাকা দিয়েছেন।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকেই শ্বশুর আবুল হোসেন, স্বামী মোহাম্মদ উল্যাহ লিটন, শাশুড়ি বাসুরা বেগম, ননদ নয়ন বেগম, কাজল রেখা ও পারভিন আক্তার সহ সবাই পলাতক।
তথ্যসূত্রে জানা যায় নিহত নুপুর সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের পূর্ব জামিরতলী গ্রামের ফখরুল ইসলামের মেয়ে। ২০২২ সালে দত্তপাড়ার করইতলা গ্রামের ওমান প্রবাসী লিটনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিহতের ভাই রাকিব হোসেন রায়হান জানায়, তারা ৫ ভাই। কোনো বোন ছিল না। এতে দুধের শিশু নুপুরকে তার বাবা-মা পালক নেয়। নুপুরের জাতীয় পরিচয়পত্রেও তাদের বাবা-মায়ের নাম ও ঠিকানা একই। নুপুরকে কখনো তারা পালক হিসেবে ভাবেনি। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন নুপুর যে পালক মেয়ে সেটি জানতে পারে। এরপর থেকে তারা প্রতিনিয়ত তাকে মারধর করতেন।

গণমাধ্যম কর্মীদের রাকিব হোসেন রায়হান বলেন, বুধবার সকাল ৭টার দিকে নুপুরের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। মঙ্গলবার ফার্নিচারের জন্য লিটন, তার মা বাসুরা বেগম ও বোন পারভিন আক্তার আমার বোনকে মারধর করেছে বলে নুপুর অভিযোগ করেছে ।
আমি ঘটনাটি জানতে পেরে লিটনের সঙ্গে কথা বললে আমাকে তিনি অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। দুই ঘন্টা পরই শুনি আমার বোন আর নেই। বোনকে মেরে ঝুলিয়ে রেখে তারা পালিয়েছেন।
উক্ত ঘটনা সম্পর্কে দত্তপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এটিএম কামাল উদ্দিন বলেন, পালক মেয়ে হওয়ায় বিয়ের পর থেকে নুপুরের ওপর স্বামী-শাশুড়ি ও ননদরা নির্যাতন চালিয়েছেন বলে শুনেছি। ইউপি সদস্যসহ আশপাশের লোকজনও আমাকে সেটি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে তিনি আরও জানান, নুপুরে মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। তার এক পা খাটের বাইরে, অন্য পা খাটের ওপরে ছিল। দরজা আটকানো থাকলেও জানালার একটি কাঁচ ভাঙা ছিল।

এই আত্মহত্যার ঘটনার সম্পর্কে জানতে চাইলে দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন বলেন, দরজা ভেঙে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতালের পাঠানো হয়েছে।

দেশ জার্নাল বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----