বুধবার, ২৩শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

আন্দোলনে গিয়ে গিয়ে সাগর-রুনি হত্যার বিচার চাইছেন ছেলে মেঘ

সংবাদের আলো ডেস্ক: চলমান ছাত্র আন্দোলনে যেখানেই কেউ জড়ো হচ্ছে সেখানে ছুটে যাচ্ছেন সাংবাদিক সাগর-রুনির ১৭ বছর বয়সী সন্তান মাহির সারোয়ার মেঘ। এসব কর্মসূচিতে গিয়ে ছাত্রদের ৯ দফা দাবির পাশাপাশি তিনি তার বাবা-মায়ের হত্যার বিচারও চাইছেন। ২০১২ সালে নিজ বাসায় এই সাংবাদিক দম্পতিকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। সেই সময়ের ৫ বছর বয়সী মেঘ এখনো পাননি তার মা-বাবা হত্যার বিচার। শতাধিকবার তাদের হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় পরিবর্তন করেছে র‌্যাব। তাই বিক্ষুব্ধ মেঘ এখন বিচার চাইছেন বিভিন্ন বিক্ষোভ কর্মসূচিতে গিয়ে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের গুলি করে হত্যা ও গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) রাজধানীর ফার্মগেটে প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করে দৃশ্যমাধ্যমের শিল্পী সমাজ। সেখানে মামাকে নিয়ে হাজির হন মেঘ।

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নিজের বক্তব্যে মাহির সারোয়ার মেঘ বলেন, ‘আমি চাই সব অন্যায়ের যেন বিচার হয়। আমি চাই না এ দেশে আর কোনো রকম অন্যায় হোক। এন্ড স্টেফ ডাউন শেখ হাসিনা।’

মেঘের মামা নওশের আলম রোমান বলেন, ‘যখনি কোথাও কিছু হচ্ছে মেঘকে তখন বাসায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না। সে প্রত্যেকটা প্রোটেস্টে যেতে তৈরি হয়ে বসে থাকে, সেটা ছাত্রদের প্রোটেস্ট হোক কিংবা অন্য কারো। আসলে মেঘ তার বাবা-মা হারিয়েছে, আমি আমার বোন হারিয়েছি আজকে ১২ বছর। সাগর রুনি হত্যার পর গত ১২ বছরে আরো বহু হত্যা হয়েছে, ছোট-বড় অনেক ঘটনায় বহু মানুষ মারা গেছে। এসবের বিরুদ্ধে এতদিন আমরা না দাঁড়াতে না দাঁড়াতে আজ আমরা আমাদের দেশে একটি রাক্ষস ফয়দা করেছি। যার জন্য আমাদের সবার জীবন এখন ঝূঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সবাই বলছে মেঘকে সাবধানে রাখো। আমাকেও সাবধানে থাকতে বলছে। আসলে এখন সাবধানের মধ্যে কিছু নেই। আমরা বেডরুমে নিরাপত্তা পাইনি। এখন একটা শিশু বাচ্চা তার বাসার ছাদেও নিরাপত্তা পাচ্ছে না। এটা এমন একটা সময় যে সময়ে সবাইকে দাঁড়াতে হবে নিজেদের প্রয়োজনে, আমাদের সন্তানদের বাঁচানোর জন্য, তাদের সুন্দর ভবিষ্যত দেওয়ার জন্য। এবং আমরা এই ১৫ বছরে যে হত্যাকাণ্ডগুলো হয়েছে এবং ছাত্র হত্যার বিচার চাই। আমি সেই পুলিশের বিচার চাই যে কার্নিশে লুকিয়ে থাকা ছেলেকে ৬টি গুলি করে হত্যা করেছে।

একই সমাবেশে চলচ্চিত্র পরিচালক অমিতাভ রেজা চৌধুরী বলেন, ‘এই রাজনীতি, ভয়ের রাজনীতি, এই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে রাজনীতি, যেভাবে গুলি করা হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর প্রয়োজন ছিল আরও আগে। বড্ড দেরি হয়ে গেছে।’

চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদ বলেন, `দেশের মানুষ যখন সবাই একসাথে নায্য দাবি রাখে, সেটা ফেলে দেয়ার মতো না। দেখেন, আপনি যদি সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ হন, আপনি রাত্রে বেলা ঘুমাতে পারবেন না। আমার কানে এখনো বাজে যে – কারো পানি লাগবে?’

এ সময় মামুনুর রশীদ, অমিতাভ রেজা চৌধুরী, আকরাম খান, আজমেরী হক বাঁধন, পিপলু আর খান, ঋতু সাত্তার, আমরিন মুসা, আশফাক নিপুন, সুকর্ণ শাহেদসহ অনেকে। বৃষ্টির কারণে সবাই বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করেছেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন অভিনয়শিল্পী মোশাররফ করিম, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা, নির্মাতা নূরুল আলম আতিক, মাতিয়া বানু শুকু, রেদওয়ান রনি, তানিম নূর, নুহাশ হুমায়ূন, সৈয়দ আহমেদ শাওকী, আদনান আল রাজীব, শঙ্খ দাশ গুপ্ত, অভিনয়শিল্পী ইরেশ যাকের, সিয়াম আহমেদ, নাজিয়া হক অর্ষা, জাকিয়া বারী মম, সুকর্ণ শাহেদ, মোস্তফা মন্ওয়ার, দিপু ইমাম, সাবিলা নূর, প্রবর রিপন, শ্যামল মাওলাসহ চলচ্চিত্র অঙ্গণের শিল্পী ও কলাকুশলীরা উপস্থিত ছিলেন।

দেশ জার্নাল বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----